নির্লজ্জ ভালবাসা
--তুমি এখনও সিগারেট খাচ্ছো? --দেখতেই তো পারছো! --কতবার না নিষেধ করেছিলাম? --তোমার নিষেধ শুনবো কেন? --আমি বলেছি তাই শুনবে! --নিষেধ করার তুমি কে শুনি?
--আমি কেউ না,তবুও শুনতে হবে! --তাহল শুনবো কেন? --থাকো তাহলে! আমি যাই! . মুন্নি চেয়ার থেকে উঠে হাটা ধরলে, রিয়াদ পিছন থেকে নরম সুরে আবার ডেকে বলে,, . --সত্যিই কি চলে যাচ্ছো?? --তো কি করবো? --এমনিতেই তো যাবে,বসো না একটু! --সিগারেট খাওয়া মানুষ পছন্দ করি না!
--আচ্ছা ঠিক আছে এই যে ফেলে দিলাম! . রিয়াদ হাত থেকে সিগারেটি ফেলে দিলে! মুন্নি পিছন ফিরে আবার চেয়ারে এসে বসে জিজ্ঞেস করে,,, . --এই অভ্যাসটা আজও ছাড়তে পারোনি? --অনেক চেষ্টা করেও হয়ে উঠেনি! --তো হঠাৎ এখানে আসতে বললে যে!
--কি জানি,, হঠাৎ মনে পরলো তাই! --নাম্বার পেয়েছো কোথায়? --পেয়েছি কোন একজনের মাধ্যমে!
--জানলে কিভাবে দেশে ফিরেছি? --ওটা কোন এক মাধ্যমে! --আজ পাচ বছর পর দেখা তাইনা? --হ্যা ৪ বছর ১০ মাস ১৭ দিন!
. মুন্নি অবাক দৃষ্টিতে রিয়াদের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে, হিসাবে নিকাশে তুমি এখনও ঠিক আগের মতই আছো! একটুও বদলাও নি! শুধু মুখে সেই মশ্রিন ভাবটা নেই! বিষন্নতার কিছুটা ছাপ এসেছে, . --কি ব্যাপার এভাবে তাকিয়ে আছো যে? . রিয়াদের ডাকে যেন মুন্নির ঘোর কাটে! অতঃপর বলে,, . --তুমি এখনও ঠিক আগের মত আছো!! --আগের মত আর কোথায় আছি! --এই যে সব কিছুর হিসাব রাখা!
--পুরানো অভ্যাস তো ছাড়তে পারিনি! --তাই তো দেখছি! --একটা কথা বলবো রাখবে? --হু বলো!
--চলো না রাস্তা দিয়ে একটু হাটি! --আমার বাসার দিকে হাটি চলো তাহলে! --কেন? --সন্ধ্যা হয়ে এলো তো! হাতে সময় কম!
--ওহ ঠিক আছে তাই চলো! . দু'জনে রাস্তার একপাশ ধরে আনমনে পাশাপাশি হাটছে! কেউ কোন কথা বলছে না! কি বলবে, বলার কোন ভাষা কেউ খুজে পাচ্ছে না! রিয়াদই এবার নিরবতা ভেঙে বলে,, . --তোমার সংসার জীবন কেমন চলছে? --হু অনেক ভালো চলছে! খুব ভালোবাসে ও আমায়!
--আবার যাচ্ছো কবে? --এইতো আগামি সপ্তাহ! --ওহ! --বিয়ে করেছো কোথায়? --কপালে তেমন কেউ জুটেনি! --কি করছো বর্তমানে?
--ছোট খাটো একটা চাকুরি করছি! --তোমার সেই গার্লফ্রেন্ডের কি খবর? --হু অনেক ভালো আছে!
--বিয়ে করছো না কেন তাহলে? --আরও কিছুদিন যাক তারপর করবো! --বয়স তো কম হল না! . রিয়াদ কিছু বলার আগেই সামনের দিকে চোখ পড়ে! কোন এক পরিচিত মানুষ হেটে আসছে! দূর থেকে তো অবনির মতই লাগছে! একটু কাছে আসতেই আরে হ্যা অবনিই তো! . --আরে রিয়াদ ভাই, আপনি এখানে? --কি ব্যাপার,কেমন আছিস ত? --আগে বলেন আপনি কেমন আছেন?
--এইতো ভালো! --মুন্নি ভাবির কোন খোজ পেলেন? --হ্যা পেয়েছি,না পাওয়ার মত!
--অনেক বড় ক্ষতি করে দিলাম আপনার! . রিয়াদ কিছু বললো না! এদিকে মুন্নি হতভাগ হয়ে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে আছে! কোথায় যেন মেয়েটিকে দেখেছে! কিন্তু সঠিক মনে করতে পারছে না! অবশেষে মনে পরে হ্যা,রিয়াদের সাথে দেখা সেই মেয়েটিই তো! কিন্তু রিয়াদ কে ভাইয়া বলে ডাকছে কেন তা বুঝতে পারছে না! . --আচ্ছা ভাইয়া,,পাশের জন কে?
. রিয়াদ এবারও কিছু বললো না! মুন্নি এবার নিজেই উত্তরে বলে,আমিই মুন্নি!
. নামটা শুনে অবনি যেন আকাশ থেকে পড়লো! কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না, তাই খুবই অবাক হয়ে বলে,,
. রিয়াদ এবারও কিছু বললো না! মুন্নি এবার নিজেই উত্তরে বলে,আমিই মুন্নি!
. নামটা শুনে অবনি যেন আকাশ থেকে পড়লো! কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না, তাই খুবই অবাক হয়ে বলে,,
--আপনিই মুন্নি??? --জি আমিই মুন্নি! --আপনাকে জানেন আমি কত খুজেছি?
--কেন? --আপনার ভুল ধারনা ভাঙানোর জন্য! --কিসের ভুল ধারনা? --রিয়াদ ভাইয়ে প্রতি যে ভুল ধারনা!
--কি বুঝাতে যাচ্ছেন? --আপনি ঐদিন যা দেখেছিলে সবই ভুল! --নিচের চোখকে অবিশ্বাস করব? --কখনও চোখের দেখায়ও ভুল থাকে!
. এতক্ষন পর রিয়াদ মুখ খুলে বলে,,ঐ অবনি কি হচ্ছে এসব!
. --মুন্নি ভাবিকে সব জানানো দরকার!!
--কি লাভ তাতে? --ভুল ধারনটা তো ভাঙবে!
. রিয়াদ আর কোন কথা বললো না! কি বলবে?কিছুই তো বলার নেই! অবনি আবার বলতে শুরু করলো! আসলে মুন্নি আপু আমি অনাথ!
. ছোট বেলায় বাবা-মা ফেলে কোথায় চলে গেছে জানি না! সেই ছোট বেলা থেকে রিয়াদ ভাইয়া আপন ছোট বোনের মত মানুষ অনাথ আশ্রমে রেখে মানুষ করেছেন! যখন যা চেয়েছি যথা সাদ্ধ্য দিতে চেষ্টা করেছে!
. রিয়াদ ভাইয়া সব বলেছে আমায়! তুমি নাকি আমাদের অনেক জায়গায় অনেকদিন একসাথে ঘুরতে দেখে রাগ করেছো!
. রিয়াদ ভাই আমার আপন ভাইয়ের মত! আমার মন খারাপ থাকলে মাঝে মাঝেই ভাইয়া আমায় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যেত, শুধু মাত্র আমায় খুশি রাখার জন্য!
. --কি ব্যাপার তুৃমি এখন বাসায় যাওনি
. মুন্নি চমকে উঠে পিছনে ফিরে তাকায়! সাথে রিয়াদ ফিরে তাকায় মহসিন(মুন্নির স্বামী)দাড়িয়ে আছে! হাতে জ্বলন্ত সিগারেট! অতঃপর মুন্নি ভয়ে ভয়ে উত্তর দেয়,,
. মুন্নি চমকে উঠে পিছনে ফিরে তাকায়! সাথে রিয়াদ ফিরে তাকায় মহসিন(মুন্নির স্বামী)দাড়িয়ে আছে! হাতে জ্বলন্ত সিগারেট! অতঃপর মুন্নি ভয়ে ভয়ে উত্তর দেয়,,
. --এই তো এখনই যাচ্ছি! --এদের তো ঠিক চিনলাম না! --এই পূর্ব পরিচিত! --হু বুঝলাম,তো বাসা চলো,সন্ধ্যা হয়েছে!
. এই বলে মহসিন হাটা দিলে সাথে মুন্নিও হাটা দেয়! আর মনে মনে বলতে থাকে,সেই স্কুল জীবন থেকে তোমার সাথে প্রতিযোগিতায় নেমেছি, কখন ক্লাসে হারাতে পারিনি! জীবনের শেষ সিদ্ধান্তে আজ হারিয়ে দিলে!
সত্যি খুব অবাক করে দিলে আজ! তোমাকে আমি হারাইনি,,হারিয়েছি সত্যিকারের ভালোবাসা! . চোখের পানি আসলেই খুব নিলর্জ! কাউকে যেন মানতে চায় না! রিয়াদও তাই সাথে সাথেই পিছন ফিরে হাটা দেয়! আর মনে মনে বলতে থাকে;
. যে সিগারেট তুমি সবচেয়ে নেশি ঘৃনা করো,,সেই সিগারেট খাওয়া একজনের সাথে এখন একই ছাদের নিচে বসবাস করছো! তুমিও সত্যিই আমার মত ভালো নেই....
. যে সিগারেট তুমি সবচেয়ে নেশি ঘৃনা করো,,সেই সিগারেট খাওয়া একজনের সাথে এখন একই ছাদের নিচে বসবাস করছো! তুমিও সত্যিই আমার মত ভালো নেই....
1 মন্তব্য(গুলি):
আরো নতুন নতুন ভালোবাসার গল্প পড়তে
এখানে ক্লিক করুন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন